প্যাঁচা সংরক্ষণ : ইঁদুর দমনের একটি জৈবিক পদ্ধতি
ড. মোঃ শাহ আলম১ ড. এ টি এম হাসানুজ্জামান২
ইঁদুর নামক প্রাণীটির সাথে আমরা সবাই পরিচিত। প্রাণীটি ক্ষুদ্র হলেও এর ক্ষতির ব্যাপকতা অনেক বেশি। এরা যে কোনো খাদ্য খেয়ে বাঁচতে পারে। যে কোনো পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারে।
ইঁদুর আমাদের বৈশ্বিক জীববৈচিত্র্যের একটি প্রাণী। জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য রক্ষা করতে ইঁদুরের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। সময়ে সময়ে ইঁদুর ফসল ও কৃষকের প্রধান শত্রু হিসেবে আবির্ভূত হয়। জমির শস্য ও গোলার ফসল রক্ষার্থে ইঁদুর দমন করতে হয়। আমরা জানি ইঁদুরের প্রধান শত্রু প্যাঁচা, চিল, সাপ, বিড়াল প্রভৃতি। প্যাঁচা দিয়ে জৈবিক উপায়ে ইঁদুর দমন করা গেলে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা পাবে। সেই সাথে কৃষকও স্বল্প খরচে ফসলি জমির ও গোলার শস্য ইঁদুরের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারবে।
ইঁদুর ব্যবস্থাপনায় জৈবিক দমন এ প্রক্রিয়ায় ইঁদুর ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন জীবিত জীব যেমন প্যাঁচা, বেজি, বিড়াল, গুঁইসাপ এবং কুকুরের ব্যবহার অপরিসীম। বর্তমানে বেজি বা গুঁইসাপের পরিবেশ বিপন্ন। গুইসাপের চামড়া মূল্যবান হওয়ায় অবৈধ শিকারের ফলে এদের সংখ্যাও দিন দিন কমে যাচ্ছে। তাছাড়া মাঠ পর্যায়ে ইঁদুর ব্যবস্থাপনায় বিড়াল এবং কুকুরের ব্যবহার অপর্যাপ্ত। কারণ বিড়াল বা কুকুরকে ইঁদুর শিকার করতে হলে দীর্ঘ সময় নিয়ে ‘ওত পাততে বা এমবুশ করতে হয়। ফলে এদের ক্ষেত্রে ইঁদুর ধরার সফলতা কম। এক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গিয়েছে যে, প্যাঁচার খাদ্যাভাসে বা খাদ্য-শিকলে ইঁদুরের দেহাবশেষ সর্বোচ্চ, শতকরা প্রায় ৯০ ভাগ অর্থাৎ খাদ্য-শিকলের ৯০ ভাগ ইঁদুরের দখলে। শুধু তাই নয়, ইঁদুরের আবাসস্থল খুঁজে প্যাঁচা শিকার করে বিধায় এর শিকার-সফলতাও অনেক বেশি। একটি প্রাপ্তবয়স্ক লক্ষীপেচা প্রতিদিন ৩-৪টি ইঁদুর ভক্ষণ করে কিন্তু যখন বাসায় বাচ্চা থাকে তখন প্রায় প্রতিদিন ২৫টি ইঁদুর সংগ্রহ করে। কাজেই একটি ক্ষুধার্ত প্যাঁচা পরিবার বছরে প্রায় ৩০০০টি ইঁদুর ভক্ষণ করে থাকে। এছাড়া রাতে ইঁদুর ও প্যাঁচা দুটোই সক্রিয় হয় বলে মাঠের ইঁদুর ব্যবস্থাপনায় প্যাঁচার শিকার কৌশল ইঁদুরের নীরব ঘাতক হিসেবে কাজ করে।
প্যাঁচার প্রজাতি
এখন পর্যন্ত যেসব প্যাঁচার দেখা পাওয়া যায় তাদেরকে দুটো গোত্রে ভাগ করা হয়েছে: সাধারণ প্যাঁচা বা ঝঃৎরমরফধব এবং লক্ষ্মীপ্যাঁচা বা ঞুঃড়হরফধব। ভিন্ন প্রজাতির পেঁচার ডাক ভিন্ন রকম। ডাকের ভিন্নতা অনুযায়ী বাংলায় বিভিন্ন প্যাঁচার বিভিন্ন নামকরণ হয়েছে। যেমন: হুতুম প্যাঁচা (ইঁনড় নবহমধষবহংরং), ভূতুম প্যাঁচা (কবঃঁঢ়ধ ুবুষড়হবহংরং), লক্ষ্মীপ্যাঁচা (ঞুঃড় ধষনধ), খুঁড়ুলে প্যাঁচা (অঃযবহব নৎধসধ), কুপোখ (ঘরহড়ী ংপঁঃঁষধঃধ), নিমপোখ (ঙঃঁং ষবঢ়রলর) ইত্যাদি। তবে আমাদের দেশে ফসলের ক্ষেতের আশপাশে গাছগাছালিতে সাধারণত দুই ধরনের প্যাঁচা বেশি দেখতে পাওয়া যায়। লক্ষ্মীপ্যাঁচা এবং খুঁডুলে প্যাঁচা।
প্যাঁচার শিকার কৌশল
লক্ষèীপেচা খুবই দক্ষ শিকারি পাখি। ইঁদুর ও অন্যান্য ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণীর অবস্থান ও শিকার দক্ষভাবে ধরতে পারে। লক্ষ্মীপ্যাঁচা শিকারের উদ্দেশ্যে উড়ার সময় ধীর গতি এবং মথের মতো দোদুল্যমান উড়ন্ত অবস্থা সম্পূর্ণ শব্দহীনভাবে উড়তে পারে যা তাদের উপস্থিতি ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী বুঝতে পারে না ফলে প্যাঁচা তাদের শিকার ভালোভাবে খুঁজতে পারে এমনকি খচমচে শব্দও তারা শনাক্ত করতে পারে। অন্যান্য পাখির চেয়ে প্যাঁচার হালকা শরীর এবং অনেক লম্বা পাখা এবং তাদের পাখার ওজন খুবই কম যার জন্য ধীরে এবং নিঃশব্দে অনেক নিচ দিয়ে বেশি সময় ধরে উড়তে পারে। প্যাঁচার পাখা খুবই মসৃণ এবং পাখার প্রান্তে একসারি অতি সূক্ষ্ম হুকআকৃতির গঠন যা বাতাসকে আটকে রাখে ফলে পাখার কোন শব্দ হয় না। পাখার এই বিশেষ গঠনের জন্য এরা কম পরিশ্রমে বেশি জায়গা নিয়ে বেশি সময় ধরে নিঃশব্দে উড়তে পরে বিধায় এদের শিকার ধরা সহজ হয়। প্যাঁচার ঘাড়ের হাড় ঝ আকৃতির যার জন্য প্যাঁচা তার মাথাকে একদিকে ১৩৫ ডিগ্রি কোণে ঘোরাতে পারে। তাই দুই দিক মিলে এদের দৃষ্টিসীমা ২৭০ ডিগ্রি। ফলে এরা নিজের কাঁধের উপর দিয়ে পেছনে দেখতে পায়।
এদের আছে বিশেষভাবে অভিযোজিত চক্ষু যা তুলনামূলকভাবে ছোট এবং কালো কিন্তু দৃষ্টিশক্তি খুবই প্রখর, অন্ধকারেও প্যাঁচা যে কোন বস্তু স্পষ্ট দেখতে পারে। এমনকি বিশেষভাবে অন্ধকারে অভিযোজিত চক্ষু দিনের বেলাও মানুষের চেয়ে স্পষ্ট দেখতে পায়। অন্যটি হলো কানের ত্রিমাত্রিক শ্রবণ। প্যাঁচার মস্তিষ্কের একটি বিশেষ অংশ ত্রিমাত্রিকভাবে শোনার জন্য কাজ করে। এর ফলে সৃষ্ট শব্দ এবং তার অবস্থান, অন্য যে কোনো পাখির তুলনায় এরা সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পারে ফলে ইঁদুরজাতীয় প্রাণী কর্তৃক সৃষ্ট কিচিরমিচির বা অন্য যে কোনো শব্দের শব্দতরঙ্গের অবস্থান অন্ধকারের মধ্যে প্রায় ৩০ মিটার দূর হতে সঠিকভাবে শনাক্ত করতে পারে। কানে শব্দ পৌঁছার সাথে সাথে প্যাঁচা সেদিকেই দৃষ্টি ফেরায়, ফলে শিকারটি মাথার সামনের দিকে অবস্থান করে বিধায় প্যাঁচা সহজেই শিকার ধরতে পারে। রাতে বিচরণকারী অন্যান্য প্যাঁচার তুলনায়, লক্ষী প্যাঁচার দুই কানেই এক সেট করে উন্নত অংশ রয়েছে, যার খোলা স্থানটি ভিন্ন ভিন্ন কোণে থাকায় ইঁদুর কর্তৃক উৎপন্ন উচ্চ বা নিম্ন তরঙ্গ দৈঘ্যের যে কোনো শব্দ, তা কোন দিক থেকে (ডান-বাম-ওপর-নিচ) এবং কতদূর থেকে আসছে লক্ষ্মীপ্যাঁচা তা সঠিকভাবে ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যেও নির্ণয় করতে পারে। বিশেষভাবে অভিযোজিত শ্রবণ শক্তি দিয়ে এরা দিনের বেলা এমনকি ঘন ফসলের ও ঝোপঝাড়ের ভেতরও শিকার ধরতে সক্ষম।
প্যাঁচার বিশেষায়িত লম্বা পা, তীক্ষè ও শক্তিশালী নখ বা টেলন যা গভীর ফসলি জমির ভেতরে শিকার ধরতে সক্ষম। নখ বা টেলন খুবই তীক্ষè যার মাধ্যমে শিকার দৃঢ়মুষ্টিতে আকড়িয়ে ধরে ঠোঁটের সাহায্য ছাড়াই মেরে ফেলতে পারে। অন্যান্য পাখির মতো প্যাঁচার পাখা পানিরোধী (ধিঃবৎ ঢ়ৎড়ড়ভ) নয়। এই জন্য প্যাঁচা সাধারণত বৃষ্টির সময় এবং শীতে শিকার ধরা এড়িয়ে চলে, কারণ পালক ভিজে গেলে শব্দ হয় এবং শিকার ধরার সক্ষমতা কমে যায়।
প্যাঁচার বিচরণ এলাকা
প্যাঁচার বিচরণ কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ নয়। সাধারণত এরা যখন যেখানে বা যে এলাকায় থাকে সেখানকার নেস্ট বক্স (ঘবংঃ নড়ী) ব্যবহার করে। এরা ডজন ডজন বা কলোনি করে গ্রুপে কোনো এলাকায় থাকতে পছন্দ করে। সেজন্য বলা হয় যে, কোনো ফার্মে/এলাকায় একটি প্যাঁচা রাখার চেয়ে কলোনি আকারে সংরক্ষণ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। এভাবে ইধৎহ ঙষি-এর একটি কলোনি কোনো এলাকার ইঁদুরের আক্রমণকে দারুণভাবে কমিয়ে দিতে পারে। এরা আক্রান্ত এলাকার সব ইঁদুরকে দমন করতে পারে না। প্যাঁচা সব ইঁদুর ধ্বংস না করে ভারসাম্য অবস্থায় ইঁদুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রিত অনুপাতে সংরক্ষণ করে এবং প্রকৃতিতে ভারসাম্য বজায় রাখে।
পৃথিবীর সর্বত্রই পেচাজাতীয় প্রাণীকে যেখানে ইঁদুরজাতীয় প্রাণীদের অবস্থান সেখানেই দেখতে পাওয়া যায়। তাই উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশের কৃষক মাঠ ফসলের ইঁদুর নিয়ন্ত্রণের জন্য প্যাঁচাকে ব্যবহার করছে। প্যাঁচার বসবাসকে উৎসাহিত করার জন্য কৃষকের জমিতে প্যাঁচার ঘর (ঘবংঃ-নড়ী) এবং রাতে প্যাঁচা বসার জন্য টাওয়ারের ব্যবস্থা করছে এবং কাংক্ষিত মাত্রার সুফলও পাওয়া যাচ্ছে। এরই আলোকে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের অনিষ্টকারী মেরুদ-ী প্রাণী বিভাগ মাঠ ফসলের গম, বার্লি, আলু, মিস্টি আলু বিভিন্ন সবজি ইঁদুরর আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য গবেষণা প্লটের ওপর দিয়ে ৫০ মিটার পরপর ১০-১২ ফিট উচ্চতায় ঢ আকারের পর্যবেক্ষণ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। এতে রাতে প্যাঁচা বসে এবং খুঁটিকে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার (ডধঃপয ঞড়বিৎ) হিসেবে ব্যবহার করে। পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে রাতে প্যাঁচা বসে মাঠের ইঁদুর নীরবে নিঃশব্দে ধরে খায়। এরা ৮০ থেকে ১০০ গ্রাম ওজনের ইঁদুর বেশি পছন্দ করে। কারণ প্যাঁচা আস্তঃপুরো ইঁদুরটি গিলে ফেলতে বেশি আগ্রহী, তবে শিকারকৃত ইঁদুরের আকার বা তার ওজন বেশি হলে এরা প্রথমে ইঁদুরের মাথা এবং পরে মাংস ছিঁড়ে ছিঁড়ে খায়। ইঁদুরের হাড়, পশম, মাথার খুলি ইত্যাদি হজম হয় না। শিকার ধরার আগে প্যাঁচা এর আগে গৃহীত বা ভক্ষণকৃত ইঁদুরের অপাচিত অংশগুলো পিলেট (চবষষবঃ) আকারে বমি (জবমঁৎমরঃধঃবফ) করে। বমিকৃত পিলেট সংগ্রহ করে শুকিয়ে নিয়ে ৮% নরমাল ঘধঙঐ দ্রবণে ভিজালে ইঁদুরের চামড়া, হাড় এবং মাথার খুলি পৃথক হয় এবং ইঁদুর প্রজাতির শনাক্তকরণ সম্ভব হয়। পিলেট বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে যে প্যাঁচার খাবারের ৮০-৯০ শতাংশই ইঁদুর ও চিকার হাড়, পশম ও মাথার খুলি এবং এতে বুঝা যায় যে প্যাঁচার প্রধান খাবার হলো ইঁদুর, সলুই, চিকা ইত্যাদি।
তাই জৈব পদ্ধতির অংশ হিসেবে প্যাঁচা লালন-পালন বা প্রাকৃতিকভাবে সংরক্ষণের মাধ্যমে ইঁদুর ব্যবস্থাপনা করা যায়। আমাদের গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার (ডধঃপয ঞড়বিৎ) স্থাপনকৃত এলাকার আশেপাশে ইঁদুরের সতেজ গর্ত (ধপঃরাব নঁৎৎড়ংি) ও ফসলের ক্ষতির পরিমাণ পর্যবেক্ষণ টাওয়ার (ডধঃপয ঞড়বিৎ) বিহীন এলাকা হতে প্রায় ৫০-৬০ শতাংশ কম। আমরা আশা করছি ভবিষ্যতে আস্তে আস্তে প্যাঁচার সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। তাই জৈব পদ্ধতির অংশ হিসেবে প্যাঁচা লালন-পালন বা প্রাকৃতিকভাবে সংরক্ষণের মাধ্যমে ইঁদুর ব্যবস্থাপনা বা ফসলের ক্ষতির পরিমাণ কমানো সম্ভব হবে।
প্যাঁচা কমে যাওয়ার কারণ
বাংলাদেশ তথা সারা বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় প্যাঁচার সংখ্যা কমে যাচ্ছে তার প্রধান কারণ হল প্যাঁচার অস্বাভাবিক মৃত্যু ও প্রজননের সুযোগ সুবিধা হ্রাস পাওয়া। এছাড়াও আবাসস্থল হারানো; ইঁদুর নাশকের যত্রতত্র ব্যবহার; প্যাঁচার বাসা ও বিশ্রামের স্থান কমে যাওয়া।
প্রাকৃতিক পরিবেশে সংরক্ষণ করে প্যাঁচার সংখ্যা বৃদ্ধির উপায়
আবাসস্থল সংরক্ষণ : প্যাঁচা পরিবেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। প্যাঁচা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ও ফুডচেইন এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রাকৃতির পরিবেশে তাদের সংরক্ষণ করা আমাদের দায়িত্ব। নির্বিচারে বড় বড় গাছ না কেটে এগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। এতে প্যাঁচাই নয় অন্যান্য পাখি ও বন্যপ্রাণীর আবাস্থল হিসাবে ভূমিকা রাখবে।
ইঁদুর নাশকের যত্রতত্র ব্যবহারে সতর্কতা : ইঁদুরনাশক ব্যবহারের ফলে মারা যাওয়া ইঁদুর যেখানে সেখানে না ফেলে গর্তে পুঁতে ফেলতে হবে। উন্মুক্ত স্থানে ইঁদুরনাশক ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। গর্তের ইঁদুর দমনের ক্ষেত্রে গর্তের ভেতর বিষটোপ ব্যবহার করতে হবে যাতে ইঁদুর বিষটোপ খেয়ে গর্তের ভেতর মারা যায়। এতে সেকেন্ডারি বিষক্রিয়া এর সংখ্যা অনেক কমে যাবে। ফলে ইঁদুরনাশকে মৃত ইঁদুর, ইঁদুরভোজী প্রাণীর সংস্পর্শে আসবে না এবং পরিবেশ দূষণ কম হবে ও প্যাঁচা সংরক্ষণে সহায়তা হবে।
প্যাঁচা ব্যবহারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং প্যাঁচার জীবন-বৃত্তান্ত এবং তার পরিবেশগত ব্যবস্থাপনার তথ্যাদি লিফলেট, বুকলেট বা পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জ্ঞাত করা যে প্যাঁচা আমাদের কোন ক্ষতি করে না বরং এরা জমির ইঁদুর ও কীটপতঙ্গ খেয়ে ফসল রক্ষা করে থাকে। রাতে ইঁদুর ও প্যাঁচা দুটিই সক্রিয় হয় এবং প্যাঁচা ইঁদুরের আবাসস্থল খুঁজে শিকার করে। তাই এর শিকার-সফলতা অনান্য প্রাণীর তুলনায় অনেক বেশি। মাঠের ইঁদুর ব্যবস্থাপনায় প্যাঁচা নীরব ঘাতক হিসেবে কাজ করে। এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে মাঠ ফসলের ইঁদুর ব্যবস্থাপনা হবে দূষণমুক্ত ও পরিবেশসম্মত, সাশ্রয়ী হবে কৃষি উৎপাদন এবং বিপুল অর্থসম্পদ রক্ষা করা সম্ভব হবে।
লেখক : ১প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ২ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, অনিষ্টকারী মেরুদ-ী প্রাণী বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, গাজীপুর -১৭০১, মোবাইল : ০১৯১১৮৫৭৫৮৬, ই-মেইল : alamvpd@gmail.com